ক্যান্ডল  


বিবরণ 2016
diagnosis
treatment
causes
Chronic Atypical Neutrophilic Dermatosis with Lipodystrophy and Elevated Temperature (CANDLE)
ক্যান্ডল
ক্রনিক এটিপিক্যাল নিউট্রফিলিক ডার্মাটোসিস উইথ লাইপোডিসট্রফি এন্ড এলিভেটেড টেম্পারেচার (ক্যান্ডল) একটি বিরল জিনগত অসুখ। অতীতে বহু পুস্তকে এই অসুখটিকে নাকাজো নিশিমুরা সিনড্রোম বা জাপানিস অটো ইনফ্লামেটরি সিন্ড্রোম উইথ লাইপোডিসট্রফি (জেএএসএল) অথবা জয়েন্ট কনট্রাকচার, মাংসপেশী শুকিয়ে যাওয়া, মাইক্রোসাইটিক এনিমিয়া এবং পেনিকুলাইটিস জনিত শিশুদের লাইপোডিস্ট্রফি (জেএমপি) হিসেবে উল্লেখ করা ছিল। আক্রান্ত শিশুরা ঘন ঘন জ্বর, অনেকদিন/সপ্তাহ ব্যাপী থাকা চামড়ার সমস্যা যা স্থায়ী লালচে দানা হিসেবে থেকে যায়, মাংস পেশী শুকিয়ে যাওয়া, চর্বি নষ্ট হয়ে যাওয়া (যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে), গিড়া ব্যাথা এবং গিড়া শক্ত হয়ে যাওয়া এসব সমস্যায় ভোগে। চিকিৎসা না করলে এ অসুখে মারাতœক অক্ষমতা এবং এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। এটা কতটা পাওয়া যায় ? ক্যান্ডল একটি বিরল রোগ। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন রোগীর কথা বিভিন্ন বই-পুস্তকে বর্ণনা করা আছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্য রোগ সনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় এ রোগের কথা চিন্তা করা হয়ে থাকে। এটা কি বংশগত? এটা বংশগত এবং অটোজমাল রিসেসিভ রোগ (এর মানে হচ্ছে এটা লিঙ্গের সাথে সম্পর্কিত নয় এবং মা বাবার কোন রকম উপসর্গ নাও থাকতে পারে। এই ধরনের রোগ স্থানান্তরিত হওয়া মানে। ক্যান্ডল রোগটি হওয়ার জন্য একজন মানুষের দুটো পরিবর্তিত জিন প্রয়োজন। একটা মায়ের থেকে এবং অন্যটি বাবার থেকে। যেহেতু বাবা মা দুজনেই বাহক কিন্তু রোগী নয় (একজন বাহকের একটি পরিবর্তিত জিন থাকে। কিন্তু অসুখটি থাকেনা) কোন দম্পতির ০১ জন সন্তানের ক্যান্ডিল থাকলে ২য় বাচ্চার ক্ষেত্রে তা হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ২৫ ভাগ যা কিনা গর্ভ অবস্থায় রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। আমার বাচ্চার কেন এই রোগ হলো? এটা কি প্রতিরোধ করা সম্ভব? বাচ্চার এই রোগ হয়েছে কেননা সে পরিবর্তিত জিন নিয়ে জন্মগ্রহন করেছে যা ক্যান্ডল এর জন্য দায়ী। এটা কি সংক্রামক? না, এটা কোন সংক্রামক রোগ নয়। প্রধান উপসর্গ গুলো কি কি? জন্মের ২ সপ্তাহ থেকে ৬ মাসের মধ্যে রোগ শুরু হয় চামড়ায় লালচে, ঘন ঘন জ্বর হওয়া চামড়ায় গোল গোল দাগ হওয়া, যা কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। এবং লালচে দানা থেকে যায়। মুখে উল্লেখ যোগ্য পরিবর্তন হচ্ছে বেগুনী আভার মত চোখের পাতা এবং পুরু ঠোট দেখতে পাওয়া যায়। শরিরীরের বহিরাংশের চর্বি শুকিয়ে যাওয়া (প্রধানত মুখে এবং শরিরীরের হাতের, বাহু, কাঁধের মাংশ পশীতে) যা শুরু হয় সাধারনত এক বছর বয়সে এবং সব রোগীর ক্ষেত্রেই এটা থাকে, বেশির ক্ষেত্রে এর সাথে শারিরীক বৃদ্ধি বিলম্বিত থাকে। গিড়ার প্রদাহ ছাড়া গিড়া ব্যাথা প্রায় সব রোগীরই থাকে এবং পরবর্তী কালো গিড়া শক্ত হয়ে যায়। বিরল লক্ষন সমূহ হলো-চোখ লাল হয়ে যাওয়া, নডিন্টলার ইপিস্কেরাইটিস, নাক ও কানের তরুনাস্থির প্রদাহ এবং এসেপটিক মেনিনজাইটিস, চবি শুকিয়ে যাওয়া ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে এবং অপরিবর্তন যোগ্য। সম্ভাব্য জটিলতা গুলো কি কি? ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে (৩ বছরের নিচে) ক্যান্ডল হলে লিভার ক্রমান্বয়ে বড় হতে থাকে এবং বহিরাংশের চর্বি এবং মাংসপেশীর পরিমান কমতে থাকে। অন্যান্য সমস্যাগুলোই হলো হৃদপিন্ডের মাংসপেশী বড় হয়ে যাওয়া, হৃদযন্ত্রের গতি অনিয়মিত হয়ে যাওয়া এবং গিড়া শক্ত হয়ে যাওয়া। প্রতিটা শিশুর ক্ষেত্রে কি একই রকম? এ রোগে আক্রান্ত প্রতিটি শিশু মারাতœক অসুস্থ থাকে। যা হোক, প্রতিটি শিশুর উপসর্গ এক নয়। এমন কি একই পরিবারের মধ্যেও এক রকম ভাবে শিশুকে আক্রান্ত হতে দেখা যায় না। শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগটা বড়দের চেয়ে কি আলাদা? ক্রমান্ময়ে বাড়তে থাকা এই রোগটি বোঝায় যে শিশুদের ক্ষেত্রে রোগের প্রকাশ বড়দের চেয়ে আলাদা। শিশুরা মূলত ঘনঘন জ্বর হওয়া, বৃদ্ধি কমে যাওয়া, উল্লেখযোগ্য মুখমন্ডলের পরিবর্তন এবং চামড়ার লক্ষন সমূহ। মাংস পেশি শুকিয়ে যাওয়া, গিড়া শক্ত হয়ে যাওয়া এবং বহিরাংশের চর্বি শুকিয়ে যাওয়া সাধারনত এক বছর বয়সের দিকে শুরু হয় অথবা প্রাপ্ত বয়সে। প্রাপ্ত বয়সে হৃদযন্ত্রের অনিয়মিত গতি এবং হৃদযন্ত্রের মাংসপেশি বড় হয়ে যেতে পারে। রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা এই রোগ কিভাবে নির্ণয় সনাক্ত করা হয়? প্রথমেই বাচ্চার লক্ষন সমূহ দেখে ক্যান্ডল সম্পর্কে ধারনা করা হয়। জিনগত বিশ্লেষন এর মাধ্যমেই কেবল ক্যান্ডল রোগটিকে শনাক্ত করা যায়। ক্যান্ডল নিশ্চিতভাবে নির্ণয় হয় তখনই যখন দুটো জিনই মিউটেট থাকে। জিনগত বিশ্লেষন সব তৃতীয় স্তরের সেবা দান কারী নাও থাকতে পারে। কি কি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা আছে? রক্ত পরীক্ষা যেমন-ই এস আর, সিআরপি, রক্ত কণিকা সমূহের সংখ্যা, ফিব্রিনোজেন করা হয় রোগে প্রদাহের মাত্রা এবং রক্ত শূন্যতা দেখার জন্য। লিভার আক্রান্ত কিনা দেখার জন্য লিভার এর পরীক্ষা করা হয়। পর্যায় ক্রমে এই পরীক্ষাগুলো বারবার করা হয়, যে গুলো স্বাভাবিক হয়েছে কিনা বা স্বাভাবিকের কাছাকাছি এসেছে কিনা। জেনেটিক এনালাইসিসের জন্্য অল্প পরিমান রক্তের দরকার হয়। এটা কি চিকিৎসা প্রতিকার করা সম্ভব? ক্যান্ডল এর সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয় কারন এটা বংশগত/জিনগত চিকিৎসা কি কি? ক্যান্ডেল সিন্ড্রোম এর জন্য কোন কার্যকারী চিকিৎসা নেই। উচ্চমাত্রায় স্টেরয়েড (১-২ মিঃগ্রাঃ প্রতি কেজি ওজনের জন্য প্রতিদিন) ব্যবহারে কিছু উপসর্গের উপসম হয় যেমন-চামড়ার দানা, জ্বর, গিড়া ব্যাথা। কিন্তু দানা মাত্রা কমানো শুরু হয় তখনই উপসর্গ সমূহ কি পুনরায় ফিরে আসে। টিএনএফ আলফা বাধা দানকারী ঔষধ এবং ওখ-১ (এনাকিনরা) ব্যবহারে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সাময়িক উন্নতি গেয়েছে অন্যদের ক্ষেত্রে বরং বেড়েছে। টসিলোজুমাভ ব্যবহারে কিছু উন্নতি দেখতে পাওয়া যায়। পরীক্ষমূলক ভাবে জ্যাক কাইনেজ বাধা দানকারী ঔষধ টফিসিটিনিভ ব্যবহারিত হয়ে চলেছে। ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো কিকি? করটিকোস্টেরয়েডের সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হলো ওজন বেড়ে যাওয়া, মুখ ফুলে যাওয়া, মনোভাব উঠানামা করা। অনেক দীর্ঘ সময় ধরে স্টেরয়েড ব্যবহার করলে শারিরীক বৃদ্ধি কমে যায়, হাড় ক্ষয় হয়ে যায়, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস হতে পারে। করটকিোস্টরেয়ডেরে সম্ভাব্য র্পাশ্ব প্রতক্রিয়িা গুলো হলো ওজন বড়েে যাওয়া, মুখ ফুলে যাওয়া, মনোভাব উঠানামা করা। অনকে র্দীঘ সময় ধরে স্টরেয়ডে ব্যবহার করলে শাররিীক বৃদ্ধি কমে যায়, হাড় ক্ষয় হয়ে যায়, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবটেসি হতে পার।ে কত দিন চিকিৎসা করতে হবে? চিকিৎসা চলবে সারাজীবন অগতানুগতিক বা পরিপুরক চিকিৎসাগুলো কি? ক্যান্ডল সিন্ড্রোম এর ক্ষেত্রে এধরনের কোন চিকিৎসার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। কতদিন পরস্পর চেক-আপ করাতে হবে? এই রোগে আক্রান্ত বাচ্চাদেরকে অসুখটি নিয়ন্ত্রনের রাখার এবং ঔষুধের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত (বছওে কমপক্ষে ৩ বার) শিশু বারজ্বর বিশেষষ্ণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বছওে অন্তত দুবার রক্ত ও প্রসাব পরীক্ষা করাতে হবে। কতদিন পর্যন্ত এই রোগ থাকবে? ক্যান্ডল একটি জীবনব্যাপী অসুখ। যাহোক, অসুখের মাত্রা উঠা নামা করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী পরিনতি কি? আয়ু কমে যেতে পারে, বিভিন্ন অঙ্গের প্রদাহের ফল হিসেবে মৃত্যুও হতে পারে। যেহেতু আক্রান্ত শিশুদের শিশুদের কর্মক্ষমতা কমে যায়। জ্বর, ব্যাথা এবং ঘনঘন মারাতœক প্রদাহের কারনে জীবনযাপনের গুনগত মান কমে যায়। সম্পূর্ণ নিরাময় কি সম্ভব? না, সম্ভব নয়, কেননা এটি জিনগত রোগ দৈনন্দিন জীবন এই রোগ কিভাবে আক্রান্ত বাচ্চা এবং তার পরিবারকে প্রভাবিত করে। আক্রান্ত বাচ্চা এবং তার পরিবার খুব বড় ধরনের সমস্যায় ধাকে। কোন কোন বাচ্চার ক্ষেত্রে হাড়ের বাঁকা হয়ে যাওয়া তাদের দৈনন্দিন জীবনকে মারাতœক ভাবে ব্যাহত করে। অন্যান্য সমস্যাগুলো যা হতে পারে তা হলো জীবন ব্যাপী চিকিৎসার ব্যয় একটা বিরাট মানসিক চাপ। রোগী এবং বাবামায়ের জন্য শিক্ষা কর্মসূচী এটাকে নজরে আনতে পারে। আর স্কুল সম্পর্কিত দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া জরুরী। কিছু কারন আছে যা নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার পথে অন্তরায় হতে পারে এজন্যই শিক্ষকদের কাছে শিশুটির সম্ভাব্য প্রয়োজন। ব্যাখা করতে প্রয়োজন। বাবা এবং শিক্ষকদের উচিত তারা তা পারে তা করতে দেয়া। এজন্য যে তারা যেন স্কুলের কার্যকর্মে স্বাভাবিক ভাবে অংশগ্রহন করতে পারে। যাতে তারা শিক্ষামূলক কাজকর্মেই সফল হবেনা বরং সহকারী এবং বড়দের দ্বারা গ্রহনযোগ্য এবং উৎসাহিত হবে। ভসিষ্যত পেশাগত জগতে যোগ দেয়া এসব তরুন রোগীদের জন্য প্রয়োজন এবং এটা দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সর্বোপরি যন্ত্রের একটি অংশ। খেলাধূলা সম্পর্কিত খেলাধূলা যে কোন শিশুর জন্যই দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় দিক। চিকিৎসার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হলো তারা যেন যতটুকু সম্ভব স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে এবং তাদেরকে অন্যান্য শিশুদের থেকে আলাদা বিবেচনা না করা। সহনীয় মাত্রায় কাজকর্ম করতে দেয়া উচিত। যা হোক অসুখের তীব্র পর্যায়ে সীমিত শারিরীক কার্যক্রম এবং বিশ্রামের প্রয়োজন। খাবার কি রকম হওয়া উচিত? কোন সুনির্দিষ্ট খাবার নেই। আবহাওয়া কি অসুখের ধারা কে প্রভাবিত করতে পারে? যতটুকু জানা গিয়েছে, আবহাওয়া (জলবায়ু) প্রভাবিত করতে পারেনা শিশুটিকে টিকা দেয়া যাবে? হ্যাঁ, শিশুটিকে টিকা দেযা যাবে। যা হোক জীবন্ত টিকা গুলো দেওয়ার সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যৌন সম্পকি, গর্ভধারন এবং জন্ম নিয়ন্ত্রন যতটুকু জানা গেছে, প্রাপ্ত বয়সে এ সম্পর্কিত কোন তথ্য বই পুস্তকে নেই। সাধারনত নিয়মানুসারে অন্যান্য এটোইনফ্লামেটরি অসুখের মত পরিকল্পনা মাফিক গর্ভধারন ভালো কেননা গর্ভের বাচ্চার উপর জীন ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
evidence-based
consensus opinion
2016
PRINTO PReS
ক্যান্ডল কি?
রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা
দৈনন্দিন জীবন



ক্যান্ডল কি?

ক্যান্ডল কি?
ক্রনিক এটিপিক্যাল নিউট্রফিলিক ডার্মাটোসিস উইথ লাইপোডিসট্রফি এন্ড এলিভেটেড টেম্পারেচার (ক্যান্ডল) একটি বিরল জিনগত অসুখ। অতীতে বহু পুস্তকে এই অসুখটিকে নাকাজো নিশিমুরা সিনড্রোম বা জাপানিস অটো ইনফ্লামেটরি সিন্ড্রোম উইথ লাইপোডিসট্রফি (জেএএসএল) অথবা জয়েন্ট কনট্রাকচার, মাংসপেশী শুকিয়ে যাওয়া, মাইক্রোসাইটিক এনিমিয়া এবং পেনিকুলাইটিস জনিত শিশুদের লাইপোডিস্ট্রফি (জেএমপি) হিসেবে উল্লেখ করা ছিল। আক্রান্ত শিশুরা ঘন ঘন জ্বর, অনেকদিন/সপ্তাহ ব্যাপী থাকা চামড়ার সমস্যা যা স্থায়ী লালচে দানা হিসেবে থেকে যায়, মাংস পেশী শুকিয়ে যাওয়া, চর্বি নষ্ট হয়ে যাওয়া (যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে), গিড়া ব্যাথা এবং গিড়া শক্ত হয়ে যাওয়া এসব সমস্যায় ভোগে। চিকিৎসা না করলে এ অসুখে মারাতœক অক্ষমতা এবং এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

এটা কতটা পাওয়া যায় ?
ক্যান্ডল একটি বিরল রোগ। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন রোগীর কথা বিভিন্ন বই-পুস্তকে বর্ণনা করা আছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্য রোগ সনাক্ত করা সম্ভব না হওয়ায় এ রোগের কথা চিন্তা করা হয়ে থাকে।

এটা কি বংশগত?
এটা বংশগত এবং অটোজমাল রিসেসিভ রোগ (এর মানে হচ্ছে এটা লিঙ্গের সাথে সম্পর্কিত নয় এবং মা বাবার কোন রকম উপসর্গ নাও থাকতে পারে। এই ধরনের রোগ স্থানান্তরিত হওয়া মানে। ক্যান্ডল রোগটি হওয়ার জন্য একজন মানুষের দুটো পরিবর্তিত জিন প্রয়োজন। একটা মায়ের থেকে এবং অন্যটি বাবার থেকে। যেহেতু বাবা মা দুজনেই বাহক কিন্তু রোগী নয় (একজন বাহকের একটি পরিবর্তিত জিন থাকে। কিন্তু অসুখটি থাকেনা) কোন দম্পতির ০১ জন সন্তানের ক্যান্ডিল থাকলে ২য় বাচ্চার ক্ষেত্রে তা হওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ২৫ ভাগ যা কিনা গর্ভ অবস্থায় রোগ নির্ণয় করা সম্ভব।

আমার বাচ্চার কেন এই রোগ হলো? এটা কি প্রতিরোধ করা সম্ভব?
বাচ্চার এই রোগ হয়েছে কেননা সে পরিবর্তিত জিন নিয়ে জন্মগ্রহন করেছে যা ক্যান্ডল এর জন্য দায়ী।

এটা কি সংক্রামক?
না, এটা কোন সংক্রামক রোগ নয়।

প্রধান উপসর্গ গুলো কি কি?
জন্মের ২ সপ্তাহ থেকে ৬ মাসের মধ্যে রোগ শুরু হয় চামড়ায় লালচে, ঘন ঘন জ্বর হওয়া চামড়ায় গোল গোল দাগ হওয়া, যা কয়েকদিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। এবং লালচে দানা থেকে যায়। মুখে উল্লেখ যোগ্য পরিবর্তন হচ্ছে বেগুনী আভার মত চোখের পাতা এবং পুরু ঠোট দেখতে পাওয়া যায়।
শরিরীরের বহিরাংশের চর্বি শুকিয়ে যাওয়া (প্রধানত মুখে এবং শরিরীরের হাতের, বাহু, কাঁধের মাংশ পশীতে) যা শুরু হয় সাধারনত এক বছর বয়সে এবং সব রোগীর ক্ষেত্রেই এটা থাকে, বেশির ক্ষেত্রে এর সাথে শারিরীক বৃদ্ধি বিলম্বিত থাকে।
গিড়ার প্রদাহ ছাড়া গিড়া ব্যাথা প্রায় সব রোগীরই থাকে এবং পরবর্তী কালো গিড়া শক্ত হয়ে যায়। বিরল লক্ষন সমূহ হলো-চোখ লাল হয়ে যাওয়া, নডিন্টলার ইপিস্কেরাইটিস, নাক ও কানের তরুনাস্থির প্রদাহ এবং এসেপটিক মেনিনজাইটিস, চবি শুকিয়ে যাওয়া ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে এবং অপরিবর্তন যোগ্য।

সম্ভাব্য জটিলতা গুলো কি কি?
ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে (৩ বছরের নিচে) ক্যান্ডল হলে লিভার ক্রমান্বয়ে বড় হতে থাকে এবং বহিরাংশের চর্বি এবং মাংসপেশীর পরিমান কমতে থাকে। অন্যান্য সমস্যাগুলোই হলো হৃদপিন্ডের মাংসপেশী বড় হয়ে যাওয়া, হৃদযন্ত্রের গতি অনিয়মিত হয়ে যাওয়া এবং গিড়া শক্ত হয়ে যাওয়া।

প্রতিটা শিশুর ক্ষেত্রে কি একই রকম?
এ রোগে আক্রান্ত প্রতিটি শিশু মারাতœক অসুস্থ থাকে। যা হোক, প্রতিটি শিশুর উপসর্গ এক নয়। এমন কি একই পরিবারের মধ্যেও এক রকম ভাবে শিশুকে আক্রান্ত হতে দেখা যায় না।

শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগটা বড়দের চেয়ে কি আলাদা?
ক্রমান্ময়ে বাড়তে থাকা এই রোগটি বোঝায় যে শিশুদের ক্ষেত্রে রোগের প্রকাশ বড়দের চেয়ে আলাদা। শিশুরা মূলত ঘনঘন জ্বর হওয়া, বৃদ্ধি কমে যাওয়া, উল্লেখযোগ্য মুখমন্ডলের পরিবর্তন এবং চামড়ার লক্ষন সমূহ। মাংস পেশি শুকিয়ে যাওয়া, গিড়া শক্ত হয়ে যাওয়া এবং বহিরাংশের চর্বি শুকিয়ে যাওয়া সাধারনত এক বছর বয়সের দিকে শুরু হয় অথবা প্রাপ্ত বয়সে। প্রাপ্ত বয়সে হৃদযন্ত্রের অনিয়মিত গতি এবং হৃদযন্ত্রের মাংসপেশি বড় হয়ে যেতে পারে।


রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা

এই রোগ কিভাবে নির্ণয় সনাক্ত করা হয়?
প্রথমেই বাচ্চার লক্ষন সমূহ দেখে ক্যান্ডল সম্পর্কে ধারনা করা হয়। জিনগত বিশ্লেষন এর মাধ্যমেই কেবল ক্যান্ডল রোগটিকে শনাক্ত করা যায়। ক্যান্ডল নিশ্চিতভাবে নির্ণয় হয় তখনই যখন দুটো জিনই মিউটেট থাকে। জিনগত বিশ্লেষন সব তৃতীয় স্তরের সেবা দান কারী নাও থাকতে পারে।

কি কি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা আছে?
রক্ত পরীক্ষা যেমন-ই এস আর, সিআরপি, রক্ত কণিকা সমূহের সংখ্যা, ফিব্রিনোজেন করা হয় রোগে প্রদাহের মাত্রা এবং রক্ত শূন্যতা দেখার জন্য। লিভার আক্রান্ত কিনা দেখার জন্য লিভার এর পরীক্ষা করা হয়।
পর্যায় ক্রমে এই পরীক্ষাগুলো বারবার করা হয়, যে গুলো স্বাভাবিক হয়েছে কিনা বা স্বাভাবিকের কাছাকাছি এসেছে কিনা। জেনেটিক এনালাইসিসের জন্্য অল্প পরিমান রক্তের দরকার হয়।

এটা কি চিকিৎসা প্রতিকার করা সম্ভব?
ক্যান্ডল এর সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব নয় কারন এটা বংশগত/জিনগত

চিকিৎসা কি কি?
ক্যান্ডেল সিন্ড্রোম এর জন্য কোন কার্যকারী চিকিৎসা নেই। উচ্চমাত্রায় স্টেরয়েড (১-২ মিঃগ্রাঃ প্রতি কেজি ওজনের জন্য প্রতিদিন) ব্যবহারে কিছু উপসর্গের উপসম হয় যেমন-চামড়ার দানা, জ্বর, গিড়া ব্যাথা। কিন্তু দানা মাত্রা কমানো শুরু হয় তখনই উপসর্গ সমূহ কি পুনরায় ফিরে আসে। টিএনএফ আলফা বাধা দানকারী ঔষধ এবং ওখ-১ (এনাকিনরা) ব্যবহারে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সাময়িক উন্নতি গেয়েছে অন্যদের ক্ষেত্রে বরং বেড়েছে। টসিলোজুমাভ ব্যবহারে কিছু উন্নতি দেখতে পাওয়া যায়। পরীক্ষমূলক ভাবে জ্যাক কাইনেজ বাধা দানকারী ঔষধ টফিসিটিনিভ ব্যবহারিত হয়ে চলেছে।

ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো কিকি?
করটিকোস্টেরয়েডের সম্ভাব্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হলো ওজন বেড়ে যাওয়া, মুখ ফুলে যাওয়া, মনোভাব উঠানামা করা। অনেক দীর্ঘ সময় ধরে স্টেরয়েড ব্যবহার করলে শারিরীক বৃদ্ধি কমে যায়, হাড় ক্ষয় হয়ে যায়, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস হতে পারে।
করটকিোস্টরেয়ডেরে সম্ভাব্য র্পাশ্ব প্রতক্রিয়িা গুলো হলো ওজন বড়েে যাওয়া, মুখ ফুলে যাওয়া, মনোভাব উঠানামা করা। অনকে র্দীঘ সময় ধরে স্টরেয়ডে ব্যবহার করলে শাররিীক বৃদ্ধি কমে যায়, হাড় ক্ষয় হয়ে যায়, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবটেসি হতে পার।ে

কত দিন চিকিৎসা করতে হবে?
চিকিৎসা চলবে সারাজীবন

অগতানুগতিক বা পরিপুরক চিকিৎসাগুলো কি?
ক্যান্ডল সিন্ড্রোম এর ক্ষেত্রে এধরনের কোন চিকিৎসার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি।

কতদিন পরস্পর চেক-আপ করাতে হবে?
এই রোগে আক্রান্ত বাচ্চাদেরকে অসুখটি নিয়ন্ত্রনের রাখার এবং ঔষুধের মাত্রা ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত (বছওে কমপক্ষে ৩ বার) শিশু বারজ্বর বিশেষষ্ণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বছওে অন্তত দুবার রক্ত ও প্রসাব পরীক্ষা করাতে হবে।

কতদিন পর্যন্ত এই রোগ থাকবে?
ক্যান্ডল একটি জীবনব্যাপী অসুখ। যাহোক, অসুখের মাত্রা উঠা নামা করতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী পরিনতি কি?
আয়ু কমে যেতে পারে, বিভিন্ন অঙ্গের প্রদাহের ফল হিসেবে মৃত্যুও হতে পারে। যেহেতু আক্রান্ত শিশুদের শিশুদের কর্মক্ষমতা কমে যায়। জ্বর, ব্যাথা এবং ঘনঘন মারাতœক প্রদাহের কারনে জীবনযাপনের গুনগত মান কমে যায়।

সম্পূর্ণ নিরাময় কি সম্ভব?
না, সম্ভব নয়, কেননা এটি জিনগত রোগ


দৈনন্দিন জীবন

এই রোগ কিভাবে আক্রান্ত বাচ্চা এবং তার পরিবারকে প্রভাবিত করে।
আক্রান্ত বাচ্চা এবং তার পরিবার খুব বড় ধরনের সমস্যায় ধাকে।
কোন কোন বাচ্চার ক্ষেত্রে হাড়ের বাঁকা হয়ে যাওয়া তাদের দৈনন্দিন জীবনকে মারাতœক ভাবে ব্যাহত করে।
অন্যান্য সমস্যাগুলো যা হতে পারে তা হলো জীবন ব্যাপী চিকিৎসার ব্যয় একটা বিরাট মানসিক চাপ। রোগী এবং বাবামায়ের জন্য শিক্ষা কর্মসূচী এটাকে নজরে আনতে পারে।

আর স্কুল সম্পর্কিত
দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া জরুরী। কিছু কারন আছে যা নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার পথে অন্তরায় হতে পারে এজন্যই শিক্ষকদের কাছে শিশুটির সম্ভাব্য প্রয়োজন। ব্যাখা করতে প্রয়োজন। বাবা এবং শিক্ষকদের উচিত তারা তা পারে তা করতে দেয়া। এজন্য যে তারা যেন স্কুলের কার্যকর্মে স্বাভাবিক ভাবে অংশগ্রহন করতে পারে। যাতে তারা শিক্ষামূলক কাজকর্মেই সফল হবেনা বরং সহকারী এবং বড়দের দ্বারা গ্রহনযোগ্য এবং উৎসাহিত হবে। ভসিষ্যত পেশাগত জগতে যোগ দেয়া এসব তরুন রোগীদের জন্য প্রয়োজন এবং এটা দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সর্বোপরি যন্ত্রের একটি অংশ।

খেলাধূলা সম্পর্কিত
খেলাধূলা যে কোন শিশুর জন্যই দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় দিক। চিকিৎসার একটি অন্যতম উদ্দেশ্য হলো তারা যেন যতটুকু সম্ভব স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে এবং তাদেরকে অন্যান্য শিশুদের থেকে আলাদা বিবেচনা না করা। সহনীয় মাত্রায় কাজকর্ম করতে দেয়া উচিত। যা হোক অসুখের তীব্র পর্যায়ে সীমিত শারিরীক কার্যক্রম এবং বিশ্রামের প্রয়োজন।

খাবার কি রকম হওয়া উচিত?
কোন সুনির্দিষ্ট খাবার নেই।

আবহাওয়া কি অসুখের ধারা কে প্রভাবিত করতে পারে?
যতটুকু জানা গিয়েছে, আবহাওয়া (জলবায়ু) প্রভাবিত করতে পারেনা

শিশুটিকে টিকা দেয়া যাবে?
হ্যাঁ, শিশুটিকে টিকা দেযা যাবে। যা হোক জীবন্ত টিকা গুলো দেওয়ার সময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

যৌন সম্পকি, গর্ভধারন এবং জন্ম নিয়ন্ত্রন
যতটুকু জানা গেছে, প্রাপ্ত বয়সে এ সম্পর্কিত কোন তথ্য বই পুস্তকে নেই। সাধারনত নিয়মানুসারে অন্যান্য এটোইনফ্লামেটরি অসুখের মত পরিকল্পনা মাফিক গর্ভধারন ভালো কেননা গর্ভের বাচ্চার উপর জীন ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।


 
সাহায্যকারী
This website uses cookies. By continuing to browse the website you are agreeing to our use of cookies. Learn more   Accept cookies