ইহা কি ?
পিফাপা এর পেরিয়ডিক ফেভার এ্যাডেনাইটিস ফ্যারিনজাইটিস এ্যাপথোসিস অর্থ (Periodic Fever Adenitis Pharyngitis Aphthosis) এটা একটা মেডিকেল শব্দ যাতে করে জ্বর, ঘাড়ের লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, গলায় ব্যাথা, মুখে ঘা, পিফাপা সাধারনত কম বয়সী শিশুদের যা ৫ বছরের আগের শিশুদের হয়। রোগটা সাধারনত দীর্ঘমেয়াদী কিন্তু কম ভয়াবহ যার সময়ের সাথে উন্নতি হওয়ার প্রবনতা থাকে। রোগটা প্রথম চিহ্নিত হয় ১৯৪৭ সালে এবং মারসাল’স সিনড্রম (Marshall’s syndrome) বলা হতো।
ইহা কতটা সাধারন ?
রোগটা কতটা সাধারন তা জানা যায় নি কিন্তু ধারনার চেয়ে বেশী হয়।
১.৩ এই রোগের কারনগুলো কি কি ?
এই রোগের কারন জানা যায় নাই। জ্বরের সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হয়। এই সক্রিয়তা প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং গলায় ও মুখে প্রদাহ করে। এই প্রদাহ নিজে নিজে ভাল হয়ে যায় এবং দুইটা ঘটনার মাঝে প্রদাহের কোন লক্ষণ থাকেনা।
এটা কি বংশগত ?
পারিবারিক কিন্তু কোন জন্মগত কারন এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি ।
এটা কি সংক্রামক ?
এটা কোন সংক্রামক রোগ নয় এবং ছোয়াচেও নয়। তবে ইনফেকশন হয়তো আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়।
১.৬ প্রধান লক্ষনগুলো কি কি ?
প্রধান লক্ষনগুলো হলো জ্বর, তার সাথে গলায় প্রদাহ, মুখে ঘা অথবা সারভাইকেল লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া জ্বরের প্রকোপটা হঠাৎ করে শুরু হতে পারে এবং ৩ থেকে ৬ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। এই সময় শিশুটি দেখতে খুবই অসুস্থ্য মনে হয় এবং কমপক্ষে উপরে বর্নিত ৩ টার মধ্যে ১টা লক্ষন থাকতে পারে। জ্বরটা প্রতি ৩-৬ সপ্তাহ পরপর আসতে পারে কখনও কখনও খুবই নিয়মিত বিরতিতে আসতে পারে। জ্বরের মধ্যবর্তী সময়ে বাচ্চাটা ভাল থাকে এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম করে।
এটা কি সব বাচ্চাদের একই হয় ?
উপরে বর্ণিত প্রধান উপসর্গগুলো আক্রান্ত সব শিশুদের পাওয়া যায়। তাছাড়া কিছু শিশুদের কিছু কম আকারে রোগটা হয় যেখানে অন্য শিশুদের আরো কিছু বাড়তি উপসর্গ যেমন-অবষাদ, গীড়া ব্যথা, পেটে ব্যথা মাথা ব্যথা বমি অথবা পাতলা পায়খানা হতে পারে।
এটা বিভাবে সনাক্ত করা যায় ?
কোন সুনির্দিষ্ট ল্যাবরেটরী পরীক্ষা নেই পাফাপি সনাক্তকরনের জন্য। শারীরিক পরীক্ষা এবং ল্যাবরেটরী পরীক্ষা এই দুইয়ের মাধ্যমে রোগটা সনাক্ত করা যাবে। রোগটা সুনিশ্চিত করার আগে এটা জরুরী যে, অন্য সব রোগ নাকি, না এই রোগের মতই লক্ষণ তাদেরকে বাদ দেয়া।
২.২ কোন ধরনের ল্যাবরেটরী পরীক্ষা দরকার ?
রোগে আক্রান্ত হওয়ার সময় ইএসআর এবং সিআরপি এর মাত্র রক্তে বেড়ে যায়।
২.৩ এটা িিচকিৎসা যোগ্য ?
পাফাপি থেকে রোগমুক্তি হওয়ার কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই । চিকিৎসার উদ্দেশ্য হলো লক্ষনগুলো হেকে জ্বরের সময় নিয়ন্ত্রনে রাখা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় লক্ষনগুলো নিজে নিজে অথবা সময়ের সাথে সাথে কমে যায়।
২.৪ চিকিৎসাগুলো কি কি ?
লক্ষনগুলো পুরোপুরিভাবে পারাসিটেমল অথবা এনএসএআইডি ঔষধ দিয়ে ভাল নাও হতে পারে। এক কোর্স prednisone দেয়া হয় যখন প্রথম লক্ষনগুলো দেখা যায়। তখন রোগের সময়টা কমে যেতে দেখা যায়। তাছাড়া দুইটা পর্বের মধ্যবর্তী সময় হয়তো ছোট হয়ে যায় এবং পরবর্তী জ্বরের পর্বটা হয়তো আশার চেয়ে আগেই চলে আসতে পারে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে যেখানে বাচ্চা এবং পরিবার গুরুত্বপূর্নভাবে আক্রান্ত হয় তখন tonsillectomy চিন্তা করা যেতে পারে।
২.৫ রোগের পরিনতি কি ?
রোগটা কিছু বছরের জন্য থাকতে পারে, সময়ের সাথে জ্বরের মধ্যবর্তী কাল বেড়ে যেতে পারে এবং লক্ষনগুলো কিছু রোগীর ক্ষেত্রে নিজে নিজে চলে যেতে পারে।
পুরোপুরি আরোগ্য পাওয়া কি সম্ভব ?
অনেক সময় বয়ঃসন্ধিকালের আগে পাফাপি নিজে নিজে চলে যেতে পারে অথবা এর ভয়াবহতা কমে যেতে পারে। পাফাপি রোগীর কোন ক্ষতি হয় না। শিশুদের শারিরিক বৃদ্ধি এবং বিকাশ এই রোগের দ্বারা প্রভাবিত হয়না।
৩.১ কিভাবে রোগটা শিশু এবং পরিবারের প্রাত্যহিক জীবন প্রভাবিত করে ?
ঘন ঘন জ্বরের কারনে জীবনের মান ব্যহত হতে পারে। সঠিক রোগ নির্ণয় করতে দেরী হতে পারে যা কিনা বাবা মায়ের বিরক্তির কারন হতে পারে এবং মাঝে মাঝে অপ্রয়োজনবীয় মেডিকেল প্রসিডিউর দরাকার হয়।
স্কুল সম্পর্কে করনীয় কি ?
নিয়মিত জ্বরের প্রকোপ স্কুলের উপস্থিতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী রোগের ক্ষেত্রে স্কুলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা দরকার। তাছাড়া কিছু ব্যাপার থাকে যা কিনা স্কুলের উপস্থিতিতে সমস্যা করতে পারে। তাই তো স্কুলের শিক্ষকদের বুঝতে হবে। বাবা, মা এবং শিক্ষকদের অবশ্যই তাই করা উচিত যা বাচ্চাকে স্কুলের কার্যকলাপে অংশগ্রহনে স্বাভাবিকভাবে সাহায্য করে। শুধুমাত্র শিশুর পড়াশোনায় নয় এবং তা অন্যান্য বাচ্চা এবং বড়দের কাছে গ্রহনযোগ্য হতে হবে। ভবিষ্যৎ সমন্বয়তা ছোট বাচ্চাদের কর্মজীবনের দুনিয়ার দরকার এর দীর্ঘমেয়াদী বাচ্চাদের সার্বজনিক সেবার এটা একটা লক্ষ্য।
৩.৩ খেলা সম্বন্ধে করনীয় কি ?
যে কোন শিশুর জন্য খেলাধূলা একটা প্রাত্যতিক জীবনের শুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যতটা সম্ভব শিশুদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সাহায্য করা আরও একটা উদ্দেশ্য এবং তারা যে অন্যান্য শিশুদের চেয়ে আলাদা নয় তা মনে করা।
খাদ্য সম্পর্কে করনীয় কি ?
খাবার সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট পরামর্শ নেই। সাধারনত শিশুদের স্বাভাবিক এবং সুষম খাবার বয়সপোযগী হওয়া উচিত। বাড়ন্ত শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সম্মত পর্যাপ্ত আমিষ, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন যুক্ত সুষম খাবার দরকার হয়।
৩.৫আবহাওয়া কি রোগটা প্রভাবিত করতে পাওে ?
না, ইহা পারে না।
শিশুদের কি টীকা দেয়া যায় ?
হ্যাঁ, অবশ্যই শিশুদের টীকা দেয়া যায়। অবশ্যই চিকিৎসারত চিকিৎসকগনের অবগত থাকা উচিত কোন ষরাব ধঃঃবহঁধঃবফ টীকা দেয়ার পূর্বে।
যৌন জীবন, গর্ভাবস্থা ও জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কি উপদেশ?
এখন পর্যন্ত ষরঃবৎধঃঁৎব এ ব্যাপারে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সাধারনত অন্যান্য ধঁঃড়রহভষধসসধঃড়ৎু রোগের মতই ধহঃর-রহভষধসসধঃড়ৎু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বাচ্চার উপর চিন্তা করেই বাচ্চা নেয়ার ব্যাপারে পরিকল্পনা করতে হবে।