ডেফিসিয়েন্সী অফ আইএল-১ রিসেপটর এন্টাগোনিস্ট (ডিআইআরএ)  


বিবরণ 2016
diagnosis
treatment
causes
Deficiency of IL-1 Receptor Antagonist (DIRA)
ডেফিসিয়েন্সী অফ আইএল-১ রিসেপটর এন্টাগোনিস্ট (ডিআইআরএ)
বিরল জিনগত রোগ। আক্রান্ত শিশুরা মারাতœক চর্মরোগ ও হাড়ের প্রদাহে ভোগে। ফুসফুসও আক্রান্ত হয়। চিকিৎসা না করলে ভয়াবহ পঙ্গুত্ব, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। প্রকোপ কেমন ? খুবই বিরল। বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী মাত্র ১০ জন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। এ রোগের কারন কি ? এটি জিনগত রোগ। দায়ী জিনটিকে আইএল-১আরএন বলা হয়।এটি আইএল-১আরএন নামক একটি প্রোটিন প্রস্তুুত করে যা প্রাকৃতিকভাবে প্রদাই সেওে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। আইএল-১আরএ, আইএল-১ নামক প্রোটিনকে নিপেক্ষ করে। যা শরীরের একটি শক্তিশালী প্রদাহ বাহক।আইএল-১ জিনে মিউটেশন হলে ডিআইআরএ হয় যেখানে শরীর আইএল-১আরএ তৈরী করতে পারে না। তখন, আইএল-১ আর বাধা প্রদান করতে পারে না এবং রোগীর প্রদাহ শুরু হয়। কিভাবে রোগ প্রাপ্ত হয় ? অটোজমাল বিসেসিভ হিসাবে (লিঙ্গের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় এবং বাবা মায়ের কেউই রোগের বৈশিষ্ট্য বহন করে না)। এর মানে হচ্ছে ডিআইআরএ হতে হলে দুইটি মিউটেটেড জিন প্রয়োজন হবে, একটি পিতা ও অন্যটি মাতা হতে প্রাপ্ত। বাবা মা দুইজনেই হবেন ক্যারিয়ার (যাদের রোগ নয় বরং জিনের মিউটেটেড কপি রয়েছে), রোগী নয়। এরকম পিতামাতার পরবর্তী সন্তানের ২৫% এর ডিআইআরএ আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। গর্ভকালে রোগ নির্ণয় সম্ভব। কেন আমার বাচ্চার রোগটি হল ? এটি কি প্রতিরোধযোগ্য ? কারন বাচ্চাটি ডিআইআরএ রোগের জন্য প্রয়োজনীয় মিউটেটেড জিনগুলো সহ জন্মগ্রহন করেছে। এটি কি সংক্রামক ? না প্রধান লক্ষণসমূহ কি কি ? চর্ম ও হাড়ের প্রদাহ। চর্মের প্রদাহের জন্য চামড়া লাল হয়ে যায়। পুঁজ জমে ও খসখসে হয়ে যায়। এই পরিবর্তন শরীরের যেকোন স্থানে হতে পারে। চামড়ার সমস্যা এমনিতেই হতে পারে, আবার আঘাত দ্বারা বেড়ে যেতে পারে। উদাহরনস্বরুপ শিরাতে ক্যানুলা প্রায়ই প্রদাহের সৃষ্টি করে। হাড়ের প্রদাহের কারনে হাড় ফুলে যায় এবং বেশীর ভাগ সময় এর উপরিভাগের চামড়া লাল ও উষ্ণ হয় যায়। অনেক হাড়, যেমন হাত, পা ও পাঁজরের হাড় আক্রান্ত হতে পারে। প্রদাহ সাধারনত হাড়ের উপরিভাগের পর্দা বা পেরিঅস্টিয়ামে হয়। পেরিঅস্টিয়াম খুবই ব্যথা সংবেদনশীল। কাজেই আক্রান্ত শিশু প্রায়ই খিটখিটে ও দুর্দশাগ্রস্থ হয়। এজন্য খাদ্যগ্রহনে অনীহা ঘটে ও দৈহিক বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়। ডিআইআরএ তে অস্থিসন্ধির প্রদাহ সাধারনত ঘটে না । ডিআইআরএ রোগীদের নখে বিকৃতি দেখা যেতে পারে। রোগটি কি সকলের ক্ষেত্রে একই রকম ? সকলেই মারাতœক ভাবে অসুস্থ হয়। তবে এটি সকল শিশুর ক্ষেত্রে একইরকম নয়। এমনকি একই পরিবারের আক্রান্ত সদস্যরা ও সমানভাবে অসুস্থ হয় না। বড় ও ছোটদের রোগ কি একই রকম ? ডিআইআরএ কেবলমাত্র শিশুদের মধ্যেই সনাক্ত হয়েছে। অতীতে, কার্যকর চিকিৎসা সহজলভ্য হওয়ার পূর্বে এসকল শিশুরা প্রাপ্তবয়স্ক হবার পূর্বেই মৃত্যুরবণ করত। তাই, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ডিআইআরএর লক্ষণসমূহ অজানা। রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা। কিভাবে রোগ নির্ণয় করা যায় ? প্রথমত রোগের লক্ষণসমূহ বিচার করে ডিআইআরএ সন্দেহ করতে হবে। ডিআইআরএ জেনেটিক এনালাইসিসের মাধ্যমে প্রমান করা যেতে পারে। যদি রোগী ২টি মিউটেশন বহন করে, তবে ডিআইআরএ নিশ্চিত করা যায়। প্রতিটি মিউটেশন বাবা ও মা হতে প্রাপ্ত। জেনেটিক এনালাইসিস প্রতিটি টারশিয়ারী কেয়ার সেন্টারে নাও থাকতে পারে। এই পরীক্ষার গুরুত্ব কি ? ESR), CRP, whole blood count ও fibrinogen এর মত পরীক্ষাগুলো সক্রিয় রোগের সময়ে প্রদাহের মাত্রা নিরুপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। লক্ষনযুক্ত হবার পর ও এই পরীক্ষাগুলো আবার করে ফলাফল স্বাভাবিক বা প্রায় স্বাভাবিক কিনা তা দেখা হয়। জেনেটিক এনালাইসিসের জন্য সামান্য পরিমান রক্তের প্রয়োজন হয়। যেসকল শিশু আজীবন এনাকিনরা চিকিৎসায় রয়েছে তাদের পর্যবেক্ষনের জন্য অবশ্যই রক্ত ও প্রস্্রাব পরীক্ষা করতে হবে। এটি কি চিকিৎসা বা নিরাময়যোগ্য ? নিরাময়যোগ্য নয়, তবে আজীবন এনাকিনরা দ্বারা চিকিৎসা করে নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব। চিকিৎসা কি ? এন্টি ইনফ্লামেটরী ঔষধ দ্বারা ডিআইআরএ পর্যপ্তভাবে নিয়ন্ত্রনকরা সম্ভব নয়। উচ্চমাত্রার কর্টিকোস্টেরয়েড রোগের লক্ষণসমূহকে আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারে, কিন্তু এতে কিছু অনাকাঙ্খিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়। এনাকিনরা ফলপ্রদ হবার পূর্বে হাড়ের ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এনাকিনরা, আইএল-১আরএ এর কৃত্রিমভাবে তৈরী রূপ, যে প্রোটিনটি ডিআইআরএ রোগীদের কম থাকে। ডিআইআরএর একমাত্র ফলপ্রদ চিকিৎসা প্রতিদিন এনাকিনরা ইঞ্জেকশন। এভাবে প্রাকৃতিক আইএল-১আরএ এর ঘাটতি পূরণ করা হয় এবং রোগ নিয়ন্ত্রনে আসে। বার বার রোগের আক্রমনও এভাবে প্রতিরোধ করা যায়। এভাবে, বাকী জীবন ঔষধ সেবন করে যেতে হয়। প্রতিদিন ঔষধ সেবন করলে বেশীরভাগ রোগীর লক্ষণসমূহ দূরীভূত হয়। তবে কিছু রোগীর আংশীক প্রভাব দেখা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ঔষধের পরিমান পরিবর্তন করা উচিত নয়। ঔষধ সেবন বন্ধ করে দিলে রোগ আবার ফিরে আসবে। এটি একটি মারাতœক রোগ বিধায় এমনটি করা সংগত নয়। ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি ? সবচেয়ে কষ্টকর হচ্ছে ইঞ্জেকশনের স্থানে পোকার কামড়ের মত ব্যথা। বিশেষ করে চিকিৎসার প্রথম সপ্তাহে তা যথেষ্ট ব্যথাময়। ডিআইআরএ ব্যতীত অন্য রোগে আক্রান্তদের জীবানু সংক্রমন ঘটে। ডিআইআরএ আক্রান্তদেরও একই প্রতিক্রিয়া হয় কেন তার কারন জানা যায় নাই। এনাকিনরা দ্বারা চিকিৎসা করা হচ্ছে এমন কিছু বাচ্চার আশাতীতভাবে ওজন বৃদ্ধি ঘটে। আমরা জানি না ডিআইআরএ তেও তা হয় কি না। ২১ শতকের শুরু হতে এনাকিনরা শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহত হয়ে আসছে। কাজেই দীর্ঘমেয়াদী কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছ কিনা, তা এখনো অজানা। কতদিন চিকিৎসা করতে হবে? আজীবন প্রথাগত নয় অথবা বিকল্প চিকিৎসা কি ? এমন কোন চিকিৎসা এ রোগের জন্য নেই। কি ধরনের কালক্রমিক চেক আপ জরুরী? বছরে অন্তত দুইবার রক্ত ও প্র¯রাব পরীক্ষা জরুরী। রোগটি কতদিন থাকে ? আজীবন পরিনাম কি ? শীঘ্র চিকিৎসা শুরু করে চালাতে থাকলে ডিআইআরএ আক্রান্ত শিশুরা সম্ভবত স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। রোগ নির্ণয়ে বিলম্ব হলে বা নির্দেশমত ঔষধ সেবন না করলে রোগ ক্রমবর্ধমান হতে পারে। এতে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, অঙ্গবিকৃতি, পঙ্গুত্ব, চর্মের ক্ষত ও মৃত্যুও হতে পারে। সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভ কি সম্ভব ? না, কারন এটি জিনগত সমস্যা। কাজেই আজীবন চিকিৎসা রোগীকে বাধাহীন স্বাভাবিক জীবনের সুযোগ দিতে পারে। দৈনন্দিন জীবন। রোগটি শিশু বা পরিবারের দৈনন্দিন জীবনের উপর কি প্রভাব ফেলতে পারে? রোগ নির্ণয়ের পূর্বেই শিশু বা তার পরিবার বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করার পর অনেক শিশুই স্বাভাবিক জীবন যাপন করে। অঙ্গ বিকৃতি কিছু ছেলেমেয়ের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। প্রতিদিন ইঞ্জেকশন নেয়াও একটি ঝামেলা কেননা কেবল ব্যথাই নয়, এটি সংরক্ষনের প্রয়োজনে বেড়ানো বাধাগ্রস্থ হতে পারে। আজীবন চিকিৎসা মানসিক সমস্যা তৈরী করতে পারে। এক্ষেত্রে রোগী ও অভিভাবকের জন্য এডুকেশন প্রোগ্রাম কার্যকর। স্কুলের ব্যাপারে ? যখন রোগটি এনাকিনরা দ্বারা পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে তখন স্কুলে যেতে বাধা নেই। খেলাধুলা কি? স্থায়ী অঙ্গবিকৃতি না ঘটলে ও এনাকিনরা দ্বারা রোগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে থাকলে খেলাধুলায় কোন বাধা নেই। হাড়ক্ষয়ের জন্য কিছু শারীরিক সীমাবদ্ধতা থাকলেও পরবর্তীতে অতিরিক্ত সীমিতকরনের প্রয়োজন নেই। খাদ্য তালিকা ? নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকা নেই। জলবায়ু কি রোগের উপর প্রভাব বিস্তার করে ? না টীকা দেয়া যাবে ? হ্যাঁ, তবে লাইভ ভ্যাকসিন দেবার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। যৌনজীবন, গর্ভধারন, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ? বর্তমানে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ কিনা তা পরিষ্কার নয়।
evidence-based
consensus opinion
2016
PRINTO PReS
ডিআইআরএ কি /
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।
দৈনন্দিন জীবন।



ডিআইআরএ কি /

এটা কি ?
বিরল জিনগত রোগ। আক্রান্ত শিশুরা মারাতœক চর্মরোগ ও হাড়ের প্রদাহে ভোগে। ফুসফুসও আক্রান্ত হয়। চিকিৎসা না করলে ভয়াবহ পঙ্গুত্ব, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।

প্রকোপ কেমন ?
খুবই বিরল। বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী মাত্র ১০ জন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে।

এ রোগের কারন কি ?
এটি জিনগত রোগ। দায়ী জিনটিকে আইএল-১আরএন বলা হয়।এটি আইএল-১আরএন নামক একটি প্রোটিন প্রস্তুুত করে যা প্রাকৃতিকভাবে প্রদাই সেওে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। আইএল-১আরএ, আইএল-১ নামক প্রোটিনকে নিপেক্ষ করে। যা শরীরের একটি শক্তিশালী প্রদাহ বাহক।আইএল-১ জিনে মিউটেশন হলে ডিআইআরএ হয় যেখানে শরীর আইএল-১আরএ তৈরী করতে পারে না। তখন, আইএল-১ আর বাধা প্রদান করতে পারে না এবং রোগীর প্রদাহ শুরু হয়।

কিভাবে রোগ প্রাপ্ত হয় ?
অটোজমাল বিসেসিভ হিসাবে (লিঙ্গের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় এবং বাবা মায়ের কেউই রোগের বৈশিষ্ট্য বহন করে না)। এর মানে হচ্ছে ডিআইআরএ হতে হলে দুইটি মিউটেটেড জিন প্রয়োজন হবে, একটি পিতা ও অন্যটি মাতা হতে প্রাপ্ত। বাবা মা দুইজনেই হবেন ক্যারিয়ার (যাদের রোগ নয় বরং জিনের মিউটেটেড কপি রয়েছে), রোগী নয়। এরকম পিতামাতার পরবর্তী সন্তানের ২৫% এর ডিআইআরএ আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। গর্ভকালে রোগ নির্ণয় সম্ভব।

কেন আমার বাচ্চার রোগটি হল ? এটি কি প্রতিরোধযোগ্য ?
কারন বাচ্চাটি ডিআইআরএ রোগের জন্য প্রয়োজনীয় মিউটেটেড জিনগুলো সহ জন্মগ্রহন করেছে।

এটি কি সংক্রামক ?
না

প্রধান লক্ষণসমূহ কি কি ?
চর্ম ও হাড়ের প্রদাহ। চর্মের প্রদাহের জন্য চামড়া লাল হয়ে যায়। পুঁজ জমে ও খসখসে হয়ে যায়। এই পরিবর্তন শরীরের যেকোন স্থানে হতে পারে। চামড়ার সমস্যা এমনিতেই হতে পারে, আবার আঘাত দ্বারা বেড়ে যেতে পারে। উদাহরনস্বরুপ শিরাতে ক্যানুলা প্রায়ই প্রদাহের সৃষ্টি করে। হাড়ের প্রদাহের কারনে হাড় ফুলে যায় এবং বেশীর ভাগ সময় এর উপরিভাগের চামড়া লাল ও উষ্ণ হয় যায়।
অনেক হাড়, যেমন হাত, পা ও পাঁজরের হাড় আক্রান্ত হতে পারে। প্রদাহ সাধারনত হাড়ের উপরিভাগের পর্দা বা পেরিঅস্টিয়ামে হয়। পেরিঅস্টিয়াম খুবই ব্যথা সংবেদনশীল। কাজেই আক্রান্ত শিশু প্রায়ই খিটখিটে ও দুর্দশাগ্রস্থ হয়। এজন্য খাদ্যগ্রহনে অনীহা ঘটে ও দৈহিক বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হয়। ডিআইআরএ তে অস্থিসন্ধির প্রদাহ সাধারনত ঘটে না । ডিআইআরএ রোগীদের নখে বিকৃতি দেখা যেতে পারে।

রোগটি কি সকলের ক্ষেত্রে একই রকম ?
সকলেই মারাতœক ভাবে অসুস্থ হয়। তবে এটি সকল শিশুর ক্ষেত্রে একইরকম নয়। এমনকি একই পরিবারের আক্রান্ত সদস্যরা ও সমানভাবে অসুস্থ হয় না।

বড় ও ছোটদের রোগ কি একই রকম ?
ডিআইআরএ কেবলমাত্র শিশুদের মধ্যেই সনাক্ত হয়েছে। অতীতে, কার্যকর চিকিৎসা সহজলভ্য হওয়ার পূর্বে এসকল শিশুরা প্রাপ্তবয়স্ক হবার পূর্বেই মৃত্যুরবণ করত। তাই, প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ডিআইআরএর লক্ষণসমূহ অজানা।


রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।

কিভাবে রোগ নির্ণয় করা যায় ?
প্রথমত রোগের লক্ষণসমূহ বিচার করে ডিআইআরএ সন্দেহ করতে হবে। ডিআইআরএ জেনেটিক এনালাইসিসের মাধ্যমে প্রমান করা যেতে পারে। যদি রোগী ২টি মিউটেশন বহন করে, তবে ডিআইআরএ নিশ্চিত করা যায়। প্রতিটি মিউটেশন বাবা ও মা হতে প্রাপ্ত। জেনেটিক এনালাইসিস প্রতিটি টারশিয়ারী কেয়ার সেন্টারে নাও থাকতে পারে।

এই পরীক্ষার গুরুত্ব কি ?
ESR), CRP, whole blood count ও fibrinogen এর মত পরীক্ষাগুলো সক্রিয় রোগের সময়ে প্রদাহের মাত্রা নিরুপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
লক্ষনযুক্ত হবার পর ও এই পরীক্ষাগুলো আবার করে ফলাফল স্বাভাবিক বা প্রায় স্বাভাবিক কিনা তা দেখা হয়।
জেনেটিক এনালাইসিসের জন্য সামান্য পরিমান রক্তের প্রয়োজন হয়। যেসকল শিশু আজীবন এনাকিনরা চিকিৎসায় রয়েছে তাদের পর্যবেক্ষনের জন্য অবশ্যই রক্ত ও প্রস্্রাব পরীক্ষা করতে হবে।

এটি কি চিকিৎসা বা নিরাময়যোগ্য ?
নিরাময়যোগ্য নয়, তবে আজীবন এনাকিনরা দ্বারা চিকিৎসা করে নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব।

চিকিৎসা কি ?
এন্টি ইনফ্লামেটরী ঔষধ দ্বারা ডিআইআরএ পর্যপ্তভাবে নিয়ন্ত্রনকরা সম্ভব নয়। উচ্চমাত্রার কর্টিকোস্টেরয়েড রোগের লক্ষণসমূহকে আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারে, কিন্তু এতে কিছু অনাকাঙ্খিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়। এনাকিনরা ফলপ্রদ হবার পূর্বে হাড়ের ব্যথা কমানোর জন্য ব্যথানাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এনাকিনরা, আইএল-১আরএ এর কৃত্রিমভাবে তৈরী রূপ, যে প্রোটিনটি ডিআইআরএ রোগীদের কম থাকে। ডিআইআরএর একমাত্র ফলপ্রদ চিকিৎসা প্রতিদিন এনাকিনরা ইঞ্জেকশন। এভাবে প্রাকৃতিক আইএল-১আরএ এর ঘাটতি পূরণ করা হয় এবং রোগ নিয়ন্ত্রনে আসে। বার বার রোগের আক্রমনও এভাবে প্রতিরোধ করা যায়। এভাবে, বাকী জীবন ঔষধ সেবন করে যেতে হয়। প্রতিদিন ঔষধ সেবন করলে বেশীরভাগ রোগীর লক্ষণসমূহ দূরীভূত হয়। তবে কিছু রোগীর আংশীক প্রভাব দেখা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ঔষধের পরিমান পরিবর্তন করা উচিত নয়।
ঔষধ সেবন বন্ধ করে দিলে রোগ আবার ফিরে আসবে। এটি একটি মারাতœক রোগ বিধায় এমনটি করা সংগত নয়।

ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কি ?
সবচেয়ে কষ্টকর হচ্ছে ইঞ্জেকশনের স্থানে পোকার কামড়ের মত ব্যথা। বিশেষ করে চিকিৎসার প্রথম সপ্তাহে তা যথেষ্ট ব্যথাময়। ডিআইআরএ ব্যতীত অন্য রোগে আক্রান্তদের জীবানু সংক্রমন ঘটে। ডিআইআরএ আক্রান্তদেরও একই প্রতিক্রিয়া হয় কেন তার কারন জানা যায় নাই। এনাকিনরা দ্বারা চিকিৎসা করা হচ্ছে এমন কিছু বাচ্চার আশাতীতভাবে ওজন বৃদ্ধি ঘটে। আমরা জানি না ডিআইআরএ তেও তা হয় কি না। ২১ শতকের শুরু হতে এনাকিনরা শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহত হয়ে আসছে। কাজেই দীর্ঘমেয়াদী কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছ কিনা, তা এখনো অজানা।

কতদিন চিকিৎসা করতে হবে?
আজীবন

প্রথাগত নয় অথবা বিকল্প চিকিৎসা কি ?
এমন কোন চিকিৎসা এ রোগের জন্য নেই।

কি ধরনের কালক্রমিক চেক আপ জরুরী?
বছরে অন্তত দুইবার রক্ত ও প্র¯রাব পরীক্ষা জরুরী।

রোগটি কতদিন থাকে ?
আজীবন

পরিনাম কি ?
শীঘ্র চিকিৎসা শুরু করে চালাতে থাকলে ডিআইআরএ আক্রান্ত শিশুরা সম্ভবত স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে। রোগ নির্ণয়ে বিলম্ব হলে বা নির্দেশমত ঔষধ সেবন না করলে রোগ ক্রমবর্ধমান হতে পারে। এতে বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, অঙ্গবিকৃতি, পঙ্গুত্ব, চর্মের ক্ষত ও মৃত্যুও হতে পারে।

সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভ কি সম্ভব ?
না, কারন এটি জিনগত সমস্যা। কাজেই আজীবন চিকিৎসা রোগীকে বাধাহীন স্বাভাবিক জীবনের সুযোগ দিতে পারে।


দৈনন্দিন জীবন।

রোগটি শিশু বা পরিবারের দৈনন্দিন জীবনের উপর কি প্রভাব ফেলতে পারে?
রোগ নির্ণয়ের পূর্বেই শিশু বা তার পরিবার বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়। রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করার পর অনেক শিশুই স্বাভাবিক জীবন যাপন করে। অঙ্গ বিকৃতি কিছু ছেলেমেয়ের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। প্রতিদিন ইঞ্জেকশন নেয়াও একটি ঝামেলা কেননা কেবল ব্যথাই নয়, এটি সংরক্ষনের প্রয়োজনে বেড়ানো বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
আজীবন চিকিৎসা মানসিক সমস্যা তৈরী করতে পারে। এক্ষেত্রে রোগী ও অভিভাবকের জন্য এডুকেশন প্রোগ্রাম কার্যকর।

স্কুলের ব্যাপারে ?
যখন রোগটি এনাকিনরা দ্বারা পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে তখন স্কুলে যেতে বাধা নেই।

খেলাধুলা কি?
স্থায়ী অঙ্গবিকৃতি না ঘটলে ও এনাকিনরা দ্বারা রোগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে থাকলে খেলাধুলায় কোন বাধা নেই। হাড়ক্ষয়ের জন্য কিছু শারীরিক সীমাবদ্ধতা থাকলেও পরবর্তীতে অতিরিক্ত সীমিতকরনের প্রয়োজন নেই।

খাদ্য তালিকা ?
নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকা নেই।

জলবায়ু কি রোগের উপর প্রভাব বিস্তার করে ?
না

টীকা দেয়া যাবে ?
হ্যাঁ, তবে লাইভ ভ্যাকসিন দেবার পূর্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

যৌনজীবন, গর্ভধারন, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ?
বর্তমানে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরাপদ কিনা তা পরিষ্কার নয়।


 
সাহায্যকারী
This website uses cookies. By continuing to browse the website you are agreeing to our use of cookies. Learn more   Accept cookies