১.১ এটা কি ?
দীর্ঘমেয়াদী পুনঃসংঘটিত রক্তস্থায়ী অষ্টিওমাইলাইটিস বেশীর ভাগ সময়ই খুব মারাতœক রকম দীর্ঘমেয়াদী আজীবন ঘটিত অষ্টিওমাইলাইটিস। শিশুরও কিশোরদের ক্ষেত্রে প্রদাহের ক্ষত মূলত লম্বা অস্থির মেটাফাইসিসকে আক্রান্ত করে। যাহোক ক্ষত অস্থির যেকোন জায়গায় হতে পারে। সেই সাথে অন্যান্য অঙ্গ, যেমন চমর্, চক্ষু, পরিপাকতন্ত্র এবং অস্থি সন্ধি আক্রান্ত হতে পারে।
১.২ এর প্রাদুর্ভাব কেমন ?
এই রোগের প্রার্দুভাব বিস্তারিত গবেষনা করা হয়নি। ইউরোপিয়ান ন্যাশনাল রেজিস্ট্রির তথ্য অনুযায়ী প্রায় দশ হাজারের মধ্যে ১-৫ জন অধিবাসী আক্রান্ত হতে পারে। এতে কোন লিঙ্গ প্রাধান্য নেই।
১.৩ রোগের কারনগুলো কী?
কারন অজানা, ধারনা করা হয় যে সহজাত ব্যবস্থার বিশৃঙ্খলার এই রোগটির যোগসূত্র থাকতে পারে। অস্থি বিপাকীয় কিছু দুর্লভ রোগ সিএনওর মত মনে হয়, যেমন হাইপোফসফাটেশিয়া, কামুরাতি এনজেলমেন সিনড্রোম, বেনাইন হাইপার অষ্টোসিস প্যাকাইডামোাের অষ্টিাসিস এবং হিষ্টিওসাইটোসিম।
১.৪ এটা কী বংশগত ?
বংশগত প্রমানিত নয়, তবে ধারনা করা হয়, কিছু সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে এটা বংশগত।
১.৫ আমার শিশুর এই রোগ কেন হয়েছে ? এটা কি প্রতিরোধযোগ্য ?
কারনগুলো এখনও অজানা। প্রতিরোধ ব্যবস্থাও অজানা।
১.৬ এটা কী ছেঁয়াচে অথবা সংক্রামক ?
না, তা নং, সম্প্রতিক গবেষনায় কোন সংক্রামক বস্তু (যেমন ব্যাকটেরীয়া) পাওয়া যায় নাই।
১.৭ প্রধান উপসর্গগুলি কী ?
রোগীরা সাধারনত অস্থি অথবা অস্থি সন্ধির ব্যাথা অভিযোগ করে আর তাই পার্থক্য মূলক ডায়াগনোসিসের মধ্যে আছে ডুভলাইল ইডিওপ্যাফিক আথ্রাইটিস এবং ব্যাকটেরিয়াল অতিষ্টওসাইলাইটিস। ডাক্তারী পরীক্ষায় বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে প্রধানত অস্থি সন্ধির প্রদাহ দেখা যায়। স্থানীয় অস্থি ফোলা এবং ব্যাথা সাধারন এবং খুড়িয়ে চলা ও কার্যকারী দেখা যায়। এই রোগ দীর্ঘমেয়াদী ও পুনঃপুন সংঘটিত হতে পারে।
১.৮ প্রতি শিশুর ক্ষেত্রে রোগটি কি একই রকম ?
ইা, প্রত্যেক শিশুর ক্ষেত্রে একই নয়। তার উপর আক্রান্ত অস্থিত্ব প্রকার, রোগের মেয়াদ এবং উপসর্গের তীব্রতা তারতম্য হয় এবং যদি পুনঃপুন সংঘটিত হয় তাহলে একই শিশুর ক্ষেত্রেও রোগের তারতম্য হতে পারে।
১.৯ বড়দের রোগের থেকে শিশুদের রোগ কী আলাদা ?
সাধারনত শিশুদের সিআরএমও বড়দের মতই হয়। তবে রোগটির কিছু উপসর্গ যেমন চ্য সোরিয়াসিস, পাস্টুলার একনি) বেশি আক্রান্ত হয়। বয়স্তদের ক্ষেত্রে রোগটিকে এমএপিএইটও সিনড্রোম ডাকা হয় সাইনোভািিটস, একনি, পাস্টুলোসিস এবং অষ্টিায়াইটিস। সিআরএমওকে এসএপিএইচও সিনড্রোম এর শিশুও কিশোর সংক্সরন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২.১ কিভাবে রোগ নির্ণয় করা হয় ?
সিনও/সিআরএমও একটি বর্জন ভিত্তিক রোগ নির্ণয়। গবেষনাগারের স্থিতিমাপ দিয়ে সিআর এমও/সিএনও ধারনা করা যায় না। রেডিওগ্রাফী দ্বারা সিএনও অস্থি ক্ষতের প্রারম্ভিক পরিবর্তন ধরা পড়ে না যদিও রোগের পরবর্তী পরবর্তী ধাপে লম্বা অস্থি ও ক্লেভিকওে অস্টিওপ্লাস্টিক এবং স্কে¬রোটিক পরিবর্তন সিএনও নির্দেশক। ভটিব্রাল কমপ্রেশন পরবর্তী রেডিওগ্রাফিক চিহ্ন, তবে অন্যান্য পাথক্যমূলক ডায়াগনোসিস যেমন-ম্যালিগন্যান্সিী ও অষ্টিওপোরোসিম বিবেচনা করতে হবে। সিএনও রোগ নির্ণয় তাই ইমেজিং স্টাডি ছাড়াও ডাক্তারী পরীক্ষার উপরই নির্ভও করে।
এমআরআই বিশ্লেষন (কনট্রাপ্টডাইসহ) ক্ষতের প্রদাহ ক্রিয়াকলাপের অতিরিক্ত পরিত্রান সরবরাহ করে। টেকনোটিয়াম কোন সিনটিগ্রাফী প্রারম্ভিক রোগ নির্ণয়ে সহায়ক কারন ক্লিনিক্যালী নিরব সিএনও ক্ষত প্রায়ই বিদ্যমান। যা হোক, পুরো শরীর এমআরআই ক্ষতের মাত্র নির্ণয়ে বেশি উপকারী।
উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রে শুধু ডায়াগনোষ্টিক ইমেজিং ম্যালিগন্যান্সি নিশ্চিত করতে পারে না এবং বায়োপসি প্রয়োজন হয়। বিশেষত সিএনও ক্ষত এবং ম্যালিগন্যান্ট অস্থি ক্ষতের মধ্যে পার্থক্য করা খুবই কঠিন। বায়োপসির স্থান নির্ণয়ে ফাংশনাল ও কসমেটিক দিকগুলো বিবেচনা যোগ্য। বায়োপসি শুধু রোগ নির্নয়ের ক্ষেত্রে করা উচিত এবং ডাক্তারের উচিত নর পুরো ক্ষত কেটে ফেলা, কারন এতে করে ফাংশনাল অসামর্থ্য ও স্কারিং হতে পারে। সিএনও চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডায়াগনোস্টিক বায়োপসি বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সিএনও রোগ আছে ধরা হয় যদি অস্থিক্ষত ৬ মাস বা তার বেশি থাকে এবং যদি রোগীর বৈশিষ্ট্যমূলক চর্ম ক্ষত থাকে। এক্ষেত্রে বায়োপসি পারিহার যোগ্য তবে স্বল্প মেয়াদী ক্লিনিক্যাল ফলো আপ ও আরেকবার ইমেজিং স্টাডী জরুরী। ম্যালিগন্যন্সীর সম্ভাবনা বাদ দিতে সম্পূর্ন একস্থানিক ক্ষত যা অস্টিওমাইলাইটিসের মত দেখায় এবং যা চারপাশের টিস্যুকে আক্রান্ত করেছে তা বায়োপসি করতে হবে।
২.২ পরীক্ষার গুরুত্ব কতখানী ?
ক) রক্ত পরীক্ষা যেমনটা আগে উল্লেখ্য, সিএনও/সিআরএমও রোগ নির্নয়ে ল্যাবরেটরী পরীক্ষা সুনির্দিষ্ট নয়। পরীক্ষসমূহ যেমন-ইরাইথ্রোসাইটি সেডিমেন্টেশন রেট (ইএসআর) সিআরপি, হোল ব্লাড কাউন্ট, এলক্যালাইল ফসফাটেজ এবং ক্রিয়েটিনিন রোগের ব্যাথাযুক্ত পর্যায়ের ক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্যমূলক বিষেশত প্রদাহের মাত্রা এবং টিত্যু আক্রান্ত নির্ণয়ে ক্ষেত্রে।যাহোক এই পরীক্ষগুলো দিয়ে প্রায়ই রোগ নিণয় করা যায় না।
খ) প্রশ্রাব পরীক্ষা সিদ্ধান্ত মূলক নয়।
গ) অস্থি বয়োপসি একস্থানিক ক্ষত এবং অনিশ্চয়তার ক্ষেত্রে জরুরী।
২.৩ এটা কী চিকিৎসাযোগ্য অথবা নিরাময়যোগ্য ? চিকিৎসাগুলো কী ?
প্রধানত নন স্টেরয়েডাল এন্টি ইনফ্লেমেটরী জাতীয় ঔষধ (এনএসএআইডি) যথা আইবিউপ্রাদেন, ন্যাপ্রক্সেন, ইনডোমেথাসিন দিয়ে চিকিৎসার দীর্ঘমেয়াদী উপাত্ত বিদ্যমান যেখানে দেখা যায় কয়েক বছর ক্রমাগত চিকিৎসায় শতকরা ৪০ ভাগ পর্যন্ত রোগী রোগমুক্ত থাকে। যাহোক উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক রোগীর নিবিড় চিকিৎসা প্রয়োজন স্টেরয়েড ও সালফাসালাযিন দিয়ে সম্প্রতিককালে ফিসফসনেট দিয়ে ভাল ফল পাওয়া গেছে। দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসায় রোগ নিরাময় না হওয়ার অবস্থতি লক্ষ্য করা গেছে।
২.৪ ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো কী ?
শিশুদের কে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা অবশ্যই নিতে হবে তা মেনে নেওয়া পিতা মাতার কাছে সহজ নয়। ব্যাথা নাশক ও এন্টিইনফেঐমেটবরী ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় তার উদ্বিগ্ন। কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যেমন পেটে ব্যথা ছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে এনএসআইডি সাধারনত নিরাপদ। বাড়তি তথ্যের জন্য থেরাপী অধ্যায় দেখুন।
২.৫ চিকিৎসা কতদিন চলবে ?
চিকিৎসার মেয়াদ নির্ভর করে স্থানীয় ক্ষত, তাদের সংখ্যা ও তীব্রতার উপর সাধারনত বহু মাস ও বছর ধরে চিকিৎসা প্রয়োজন।
২.৬ অপ্রচলিত অথবা পরিপূরক চিকিৎসাগুলো কী ?
অস্থি সন্ধির প্রদাহের ক্ষেত্রে ফিজিক্যাল থেরাপী দেওয়া যেতে পারে। যাহোক পরিপূরক চিকিৎসার কোন উপাত্ত এ ক্ষেত্রে নাই।
২.৭ কি ধরনের ধারাবাহিক চেক আপ জরুরী ?
চিকিৎসারও অবস্থায় বছরে দুইবার রক্ত ও প্রস্্রাব পরীক্ষা করা উচিত।
২.৮ রোগটি কতদিন থাকবে ?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগটি কয়েক বছর স্থায়ী হয় যদিও কিছু ক্ষেত্রে এটা সার জীবনের রোগ।
২.৯ রোগটির দীর্ঘমেয়াদি পরিনতি (সম্ভাব্য পরিনতিও ধারা) কী?
যদি যথাযথ চিকিৎসা করা যায় তবে পরিনতি ভাল।
৩.১ রোগটি শিশুর ও পরিবারের প্রতিদিনকার জীবন কিভাবে প্রভাবিত করে?
শিশু এবং পরিবার রোগ নির্ণয়ের আগে প্রায়শই বহু মাস ধরে অস্থি ও অস্থিসন্ধির ব্যথা ভোগ করে। পার্থক্য মূলক চেক আপ এর জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দরকার। রোগ নির্ণয়ের পর বর্হিঃবিভাগ এ নিয়মিত ফলোআপ সুপারিশযোগ্য।
৩.২ বাচ্চা কি স্কুলে যাবে ? অথবা খেলাধুলা করবে ?
খেলাধুলার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে। বিষেশত বায়োপসির পর অথবা যদি অস্থিসন্ধির প্রদাহ থাকে। তারপর সাধারনত শারিরীক ক্রিয়াকলাপের সীমাবদ্ধতার প্রয়োজন হয় না।
৩.৩ কী খাবে ?
নির্দিষ্ট কোন পথ্য নেই।
৩.৪ জলবায়ু কী রোগের ধারা প্রভাবিত করে?
না, এটা তা পারে না।
৩.৫ শিশুকে কী টীকা দেওফা যাবে ?
টীকা দেওয়া যাবে, তবে কট্যিকোস্টিরয়েড, মিথোট্রিক্সেট অথবা টিএনএফ আলদা ইনহিবিটর দিয়ে চিকিৎসা চলাকালীন জীবন্ত ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না।
৩.৬ যৌন জীবন, গর্ভাবস্থা ও জন্ম নিয়ন্ত্রণের কী হবে ?
সিএনও রোগীদের বাচ্চা জন্মদানে কোন সমস্যা নেই। যদি পেলভিক অস্থি আক্রান্ত হয় তাহলে যৌন জীবন কিছুটা বাধাগ্রস্থ হয়। গর্ভাবস্থায় আগে এবং গর্ভাবস্থায় চিকিৎসার প্রয়োজনীয়ত পুনমূল্যায়ন আবশ্যক।